গানটা খুবই সুন্দর হইছেরে নয়ন। খুব আবেগী একটা গান।
অন্তরে লাগে। আহা। না গানের কথার জন্য, না গানের সুরের জন্য কিন্তু শুধু তোর মুডটাই গানটাকে একটা ক্লাসিকের মান দিয়ে ফেলছে।
এই গানের আবেগ নিয়েই হয়তো এক সপ্তাহ থাকতে পারতাম নয়ন।
আহা! কত গান।
আহা গানে কতো এই অন্তর দিলাম এই জীবনে।
গানের সঙ্গে কতো ভাসলাম।
আহা! নয়ন! গানের আবেশে কতো দিন রাত গেলো।
এরপর ও আমার রব আমাকে গাইড করলো নয়ন।
আমার সেই অন্তর এখন আল্লাহর জন্য।
সেই আবেশ এখন আমার রবের জন্য।
আল্লাহ এই অন্তর মানুষকে দিছে, সেই অন্তরে এতো আবেশিত হওয়ার ক্ষমতা ও দিছে।
আর এরপর সেই অন্তরকে চুম্বকের মতো টান দিয়ে আবেশিত রাখার জন্য কতো উপকরন ও রেখে দিছে।
আল্লাহ এমনকি বলছে, এই পৃথিবীকে সে সুন্দর করছে একটা ফিতনা (পরীক্ষা) হিসেবে।
পরীক্ষা করার জন্য যে কে সেইসব ফিতনা গুলো থেকে বেঁচে থেকে তার অন্তরকে শুধু আল্লাহর আবেশে ভরতে পারে।
কে আল্লাহর কাছে, আল্লাহর জন্য তার অন্তরকে অন্য সব কিছু থেকে খালি করে রাখতে পারে।
“নিশ্চয় যমীনের উপর যা রয়েছে, তা আমি শোভা করেছি, যাতে তাদেরকে পরীক্ষা করি যে, কর্মে তাদের মধ্যে কে উত্তম।” (কোরআন সুরা আল-কাহফ ১৮ঃ৭)
সুবহানআল্লাহ,
দেখিস না, সব মানুষ কি আর শুধু একমাত্র গানের আবেশেই ভাসে, গানের আবেগেই কাঁদে?
কেউ বেছে নেয় সম্পদের আবেগ, সে নেশার মতো সম্পদ জোগাড় করে।
কেউ নারীর পিছনে।
কেউ দুনিয়া ট্রাভেল করে নেশার মতো।
কেউ থাকে শপিং করার নেশায়।
কেউ রান্নার নেশায়।
কেউ মাতে আরো উপরে ওঠার নেশায়।
কেউ মাতে সম্মান আর প্রতিপত্তির নেশায়।
কেউ মাতে সংগ্রহের নেশায়।
এমনকি যার সামর্থ্য নাই বিশেষ ধরনের কিছু সংগ্রহ করার সে, এমনকি বল পয়েন্ট কলম সংগ্রহে মেতে ঊঠে।
আহা শয়তান মানুষকে কতো ধরনের নেশায় মগ্ন রাখে।
কারো কোন বিশেষ ধরনের নেশা নাই তো সে এক কাপ চায়ের নেশায় পাগল হয়, সেই চা বা কফি একদিন না খেলে তার দিনটাই শুন্য লাগে।
এরপর কতো দৈনন্দিন বিষয়ের কতো কিছুতে মানুষ নেশার মতো অভ্যস্ত হয়।
আহা আমার কোন নেশা ছিল না, ছিলো শুধু পড়ার আর গানের।
আহা সেই মুসলিম নামধারী মুরতাদ, মুশরিক, কাফিরদের পত্রিকা ‘প্রথম আলো’,
(যার কাজ হলো আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে যতো কাজ আছে তা করা)
সে, মুরতাদদের পত্রিকাটা না পড়লে মনটা ছটফট করতো সারাদিন।
(মুরতাদ সে,
যে একসময় মুসলিম ছিলো কিন্তু তার কাজ তাকে ইসলাম থেকে বের করে দিয়েছে বা সে নিজে বের হয়ে গেছে।
আর মুশরিক এই কারনে যে, সে নিজেকে মুসলিম মনে করে কিন্তু আল্লাহর বিধান ছেড়ে অন্য কোন বিধানদাতাকে গ্রহন করে, অনুসরন করে।
আর কাফির সে যে আল্লাহর বিধানের বিপরীতে কথা বলে বা অবজ্ঞা করে,
অথবা অন্য বিধানকে উত্তম মনে করে, যদি ও হতে পারে সে নিজেকে তারপর ও মুসলিম দাবী করে বা আল্লাহকে বিশ্বাস করে।)
আর ‘প্রথম আলো’ এগুলির সব করে।
আহা জীবন। আহা আমাদের জাহিল জীবন।
আজকের ‘মুসলিম’ আরবের সেই জাহিল এর চাইতে ও নিকৃষ্ট ।
কারন আরব জাহিলদের কাছে তখন আল্লাহর কোন লিখিত বই ছিলো না।
কিন্তু আজকের মানুষের কাছে আল্লাহ বিধান তার আঙ্গুলের ডগায়।
সেই নামধারী মুসলিম আজ আল্লাহর বিধান না জেনে কাফিরের বিধান পালন করতেছে।
জাতিসংঘ নামে কাফিরের সংগঠন বিধান বানায় আর আল্লাহর বানী হাতে নিয়ে সেই জাহিলগুলি জাতিসংঘের বিধান মেনে চলে।
তারা জাতিসংঘকে আজকে রব হিসেবে নিছে।
আল্লাহ এই ‘মুসলিম’দের গাইড করুক।
সেই জাতিসংঘকে রব মেনে চলা মুসলিম নামধারী মুশরিক গুলি আমাদের চিন্তার পরিবেশ তৈরি করে দিন রাত।
আমাদেরকে সাইকোলজিকেলি এমনভাবে শেইপ (shape) করে ফেলছে যে,
আমরা তাকে ভাবি ‘আলোকিত’ মানুষ যা সেই মুশরিকগুলি আমাদের শেখায়।
যারা সব কিছুতে আল্লাহর বিপরীতে চিন্তা করে তাকেই আমরা ‘আলোকিত’ মানুষ মনে করি।
আহা এই ‘আলোকিত’ মানুষ, আসলে জাহান্নামের দিকে ডাক দেয়া মানুষের জন্য আমি গান ও লিখছিলাম। গান গাইছিলাম।
ও আমার রব, তুমি আমাকে মাফ করো।
শয়তান আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে শপথ করছে যে “আমি তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথ ভ্রষ্ঠ করে দেব। (জাহান্নামের পথে চালিত করবো।) তবে শুধু মাত্র তাদের ছাড়া যারা ‘মুখলাসিন’. (সুরা আল-হিজর ১৫ঃ৩৯-৪০)
আর এই ‘মুখলাসিন’ হলো তারা যারা খালেছ অন্তরে আল্লাহকে স্মরন করে।
মানে হইতেছে যারা আল্লাহর জন্য অন্তরকে খালি করে, যে অন্তরে সে আল্লাহ ছাড়া আর কারো স্থান দেয় না।
আর শয়তান তো তাই এমন ব্যাবস্থা করছে যাতে মানুষ তার অন্তরে আল্লাহর জন্যই জায়গা না করতে পারে। নাউজুবিল্লাহ!
আর এই অন্তরকে সবচেয়ে বেশী টান দেয় এই সঙ্গীত।
আহা নয়ন! আমার চাইতে এটা আর কে বুঝবোরে নয়ন।
কিভাবে সঙ্গীত মানুষের অন্তরকে সম্পূর্ণ দখল করে নেয়।
এক একটা গান সপ্তাহ ধরে আমার অন্তরে ভর করতো।
আমার মুড তৈরি করে দিতো এক একটা গান।
সেই যে ‘জিনের আছর’ হওয়ার মতো যেন গান আমাকে আছর করে রাখতো।
এই জন্য আল্লাহ এই সঙ্গীতকে হারাম করেছেন।
কারন আল্লাহর গাইডেন্স তো হচ্ছে মানুষকে জান্নাতে নেয়ার জন্য।
তাই সে হারাম করেছে সেসব যা মানুষকে জাহান্নামের পথে নেবে।
রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন,
‘আমার উম্মতের থেকে এমন দল আসবে যারা জিনা, সিল্কের কাপড় পরা, শরাব পান করা, সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্রকে হালাল বানিয়ে ফেলবে” (সহীহ বুখারী ৫৫৯০)
অথচ শয়তান তার কাজে সাক্সেস্ফুল।
কিভাবে আজকে সে এমন ব্যাবস্থা করছে যে, সঙ্গীত মানুষের কাছে সে নিঃশ্বাসের মতো একটা বিষয় করে ফেলছে।
এই হচ্ছে শয়তান। (আউজুবিল্লাহি মিনা-শাইতনি, মিন নাফখিহি ওয়া নাফছিহি ওয়া হামযিহি)
(আল্লাহ আমাকে রক্ষা করো শয়তান থেকে, তার নিঃশ্বাস থেকে, তার আওয়াজ থেকে, তার ফুসলানো থেকে)
তুই ফিরে আয় নয়ন। আমার ভাই।
এতো আবেগ নিয়ে কই যাবি। তুই তো বিখ্যাত হওয়ার জন্য ও গান করিস না।
নাহলে বলতাম যে, আজকে তুই যতো আবেগী, যতো হৃদয়স্পর্শী গানই করিস না কেন কোনদিন আর কিশোর কুমারের মতো মানুষের অন্তরে জায়গা নিতে পারবি না। কারন তাদের সময়ে মানুষের অন্তর কেড়ে নেয়ার অন্য জায়গা ছিলো কম। মানুষ দিনের পর দিন একই গান শুনেছে।
আর আজকে তোর গান শুনে যদি একজন কাঁদে ও, এক ঘন্টা পরেই অন্য কিছু তাকে অট্টহাসিতে ফাটিয়ে দেবে, এতো কিছুর ছড়াছড়ি যে পূরো দুনিয়ার যতো সৃষ্টিশীল মানুষের সব কিছুই তার আঙ্গুলের মাথায়। সুতরাং বিখ্যাত হওয়ার মোহে যে আজকে কিছু করে সে দুনিয়ার পরিস্থিতি, মানুষের মানসিকতা নিয়ে কোনই ধারনা রাখে না বলেই করে।
কিন্তু তোর বেলায় তো এটা ভিন্ন। তুই তো মানুষের কাছে বিখ্যাত হওয়ার জন্য গান করিস না।
নিজের আবেগ। নিজের জন্য।
আহা নয়ন! তুই তো আমার অনেক গানই শুনিস নাই।
গান তৈরি করার সময়ই কতো আমি কাঁদছি।
আমার সেই গান। সেই সব গান তো তুই জানিস না।
আহা আমি শুধু ভাবছি, আল্লাহ আমাকে জান্নাতে এর চাইতে বেশী দেবে ইন শা আল্লাহ।
কি হবে।
দিন তো চলে গেলো।
আমাকে তো মরতে হবে।
আল্লাহর জন্য এটা ছেড়ে দে, আল্লাহ তোর অন্তরে আলো দেবে।
সেই গান আমাকে যেভাবে আছর করে রাখতো,
আজকে আল্লাহর স্মরন, আল্লাহ কোরআন আমাকে সেই আছর করে রাখছে। আল হামদুলিল্লাহ।
আল হামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন, যে একটা হারাম থেকে নিজেকে মুক্ত করে সে যেন হিজরত করলো এবং সেই হিজরত শারিরীক হিজরতের চাইতে বেশী মর্যাদাবান । (মুসনাদ আহমদ ৬৭৭৪) সুবহানআল্লাহ!
চিন্তা কর নয়ন।
আল্লাহর জন্য আমাদের জীবন।
জান্নাতের জন্য তৈরি হওয়ার জন্য আমাদের জীবন।
এর মধ্যে শুধু পেটটা চালানোর জন্য আমাদের কাজ করা আল্লাহর দেখানো পথে।
সাহাবারা ইসলাম গ্রহনের পর, মুহম্মদকে (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবী হিসেবে বিশ্বাস করার পর এভাবেই তারা জীবন চালাইছে।
আর আজকে আমাদের জীবনকে ঘিরে ফেলছে কাফিরের যত বানানো সিস্টেম।
এই ঘোর থেকে ফিরে আয় নয়ন।
কাফিরের মুখে লাথি মার।
ওই মুসলিম নামধারী মুশরিকদের গালে চড় মেরে ছেড়ে দে এসব।
মুসলিমের ঘরে আল্লাহ জন্ম দেবার পর কাফিরের পুতুল হয়ে জীবন চালানোর মতো বেকুব শুধু সেই হয় যার জ্ঞ্যন নাই।
তোকে সংক্ষেপে সামান্য কিছু কথা বললাম মাত্র।
কিভাবে কুফফার গত দুইশ বছরের প্লান নিয়ে, তাদের স্কুল সিস্টেমের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে ইসলাম থেকে বের করেছে তা নিয়ে কুফফারদের লিখিত হাজার পৃষ্ঠার বই আছে, আমার সেই বিষয়ে কিছু লিখা আছে, চাইলে আমার সাইটে পড়তে পারবি।
সেগুলি পড়লে বুঝতে পারবি আমাদেরকে এ যেন কুফফার তার কারখানাতে তৈরি করছে অথচ আমরা ভাবতাম আমরা মুসলিম।
আল্লাহ আমাদের গাইড করুক।
আমার উপর রাগ করিসনারে ভাইয়া।
আমি তো সব সময় তোরে যেটা সবচেয়ে ভালো হবে সেদিকেই গাইড করছি।
এর আগে আমি তোকে গাইড করছি যখন আমার নিজের গাইড ছিলো কুফফার আর কুফফারকে রব মেনে চলা মুসলিম নামধারী মুশরিকগুলো। এদের আল্লাহ গাইড করুক।
আর আল্লাহ আমাকে মাপ করো।
আর আজকে যখন তোকে গাইড করতেছি, সেই গাইডেন্স আমি পাইছি যে আমাকে বানাইছে তার কাছ থেকে।
সেই রবের পাঠানো গাইডেন্স, কোরআন পড়ে এবং তার পাঠানো রসুলের হাদিস পড়ে।
তুই কি আজ সেই গাইডেন্স নিবি না?
তুই আমাকে মাফ করে দিস নয়ন।
তোর মনে পড়ে তোকে আমি কত মারছি?
আল্লাহ আমাকে মাফ করুক।
কতো কঠিন মার আমি তোকে মারছি।
আমার বুক ফাইটা যায় সেগুলি চিন্তা করে।
কতো বার পেন্টের বেল্ট দিয়ে আমি তোরে মারছি আমার ভাই।
আজ আমি আল্লাহর কাছে কাঁদি আর বলি আল্লাহ যাতে তোর সেই ধৈর্যের জন্য তোকে রহম করে, তোরে মাফ করে দেয় আর তোকে গাইড করে।
সেই মারের মুখে ও বিনীত থাকার জন্য (বেয়াদবী না করার জন্য) আল্লাহ তোকে আল্লাহর কাছে আজ অবনত করুক।
আমার রব, আমার ভাইকে তুমি গাইড কর। আমিই তো তাকে এই গানের দিকে গাইড করছি।
আজ তুমি আমাকে যখন তা থেকে বের করছো, তুমি যখন আমাকে রহম করছো, তখন তাকে কেন রহম করবা না?
তুমি তো আরহামুর রহিমীন।
তুমি আমার ভাইকে গাইড কর।
Discover more from Basheera Wa Nazeera
Subscribe to get the latest posts sent to your email.